একটি যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনার নির্মম সাক্ষী হলো দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।রাজধানীর দিয়াবাড়ির আকাশে ভেসে আসা হঠাৎ এক বিকট বিস্ফোরণের শব্দ যেন থমকে দিল গোটা শহর। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের চত্বরে ঘটলো এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হলো সরাসরি শিক্ষাপ্রাঙ্গণে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আরো অনেকের মতো সেই মর্মান্তিক ঘটনার বলি হলো ১৩ বছর বয়সী এক কিশোর, জারিফ। একটি শিশুমনের সব স্বপ্ন, হাসি ও সম্ভাবনা আগুন যেন গ্রাস করে নিল।
দগ্ধ হয়েছিল শরীর, পুড়ে গিয়েছিল স্বপ্ন
জারিফের শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। তখনই বোঝা গিয়েছিল, লড়াইটা কঠিন হবে। তাকে দ্রুত ভর্তি করা হয় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। কয়েকদিন ধরেই চলছিল মৃত্যুর সঙ্গে তার সংগ্রাম।কিন্তু শেষরক্ষা আর হলো না। শুক্রবার, ২৫ জুলাই দুপুরে, জীবনের সব চাওয়া-পাওয়া থেমে গেল তার। আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান নিশ্চিত করেন এই দুঃসংবাদ।
কার দায় এড়ানো সম্ভব?
এই দুর্ঘটনা একা একটি স্কুলের বা পরিবারের জন্য নয়।এটি একটি জাতির ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ। একটি যুদ্ধবিমান কিভাবে জনবহুল স্কুল ভবনের পাশ ঘেঁষে ওড়ে? কেন যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি?এই প্রশ্নগুলো আজ শুধু মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী, শিক্ষক কিংবা অভিভাবকদের নয়,পুরো দেশের।
হৃদয়ের এক কোণায় জারিফ থাকবে
জারিফ হয়তো চলে গেছে, কিন্তু তার না বলা গল্প, অসমাপ্ত স্বপ্ন আমাদের মনে গেঁথে থাকবে। এই মৃত্যুর দায় যেন ধুয়ে না যায় সময়ের স্রোতে।জারিফের মৃত্যু যেন আরেকটি শিশুর স্বপ্নভঙ্গের নাম না হয়। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার, নিরাপত্তা নীতির এবং জরুরি ব্যবস্থাপনার প্রতিটি স্তরে এখনই জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
একটি জাতি তখনই সভ্য, যখন সে তার সন্তানদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।